সুকুমার চৌধুরী



সুকুমার চৌধুরীর কবিতা


সেবিধ


কাটিয়ে উঠতে উঠতে আজ যে রকম বুঝতে পারি
যে মহিমা তোমাকে দিয়েছিলাম খুব, খুব ভালোবেসে
তুমি তার অংশত অযোগ্য ছিলে

কাটিয়ে উঠতে উঠতে আজ সে রকম বুঝতে পারি
হয়তো হীনম্যতা ছিলো, অযোগ্যতা ঢের আগে
                      টের পেয়ে গিয়েছিলে
তাই সাড়া দেওয়া হোয়ে ওঠেনি তোমার

 

অনিচ্ছাভ্রমণ


আর অনেকদিন পর ইডিয়ট কোলকাতা
ধন্য হোয়ে উঠলো আমার অনিচ্ছাভ্রমণে
কড়িকুষ্ঠের মতো হেসে উঠলো ভুগর্ভের পাতাল প্রণালী
ডাবের পাহাড় থেকে তিনলক্ষ ভিখিরির মাথা
আমাকে কুর্ণিস কোরে স্বাগত জানালো
আর আমি ট্রামলাইনের হিম মাড়িয়ে মাড়িয়ে
বহুদিন পর হেঁটে এলাম আজ আর
ওমনি টুকটুক করে জ্বলে উঠলো বিজ্ঞাপনের নীল আলো
আর আমার মনে পড়ে গেল আমি দেখেছিলাম
ট্রেনের কামরায় ঘুমন্ত শ্লিপার থেকে
লোভের মতো ঝুলে ছিলো কালো ব্রেসিয়ার
আঃ ঈশ্বর আমার তো শীত কোরছে না এই ফুর্ফুরে হাওয়ায়
তবে কি স্বল্পবাস যুবতীদের শরীরের আঁচে
কোলকাতা হারিয়ে গেছে শীতের বিষাদ
আর আমি সিগারেট ধরিয়ে হেঁটে যাচ্ছি
কোলকাতার বুক চিরে চিরে
আর ধন্য হোয়ে উঠছে তোমাদের শহর ইডিয়ট কোলকাতা

লোভ


কখনো ডাকি না তবু মাঝে মাঝে সামনের চেয়ারে
এসে বসে লোভ
ওষ্ঠে বারুদগন্ধ, চুলে রাত্রিজট, আস্কারার মতো
চকিত ব্রা-উকি ।
ভালোমানুষের মতো বসে থাকি । আর
লোভ জমাট বাঁধে, উগ্রতর হয় ।
আসেপাশে লকলক কোরে ওঠে অনেক পুংক্ষোভ ।
ওরা সব শিবিরের লোক । সতীর্থ আমার,
তবে ভন্ড নয়

মহিমা

উৎসমুখের দিকে চেয়ে থাকি । চেয়ে থাকি
নির্নিমেষ । তার তোড়, চোরাস্রোত, মৃদুমন্দ
গহন সরোদ স্পর্শের অগমে থেকে যায় ।
এই আবিল অমনোযোগ, অজ্ঞান স্খলন
লুকিয়ে লুকিয়ে রাখি । পাঠ সাঙ্গ হলে তার
মৌ্ন অভিঘাতে রোমহর্ষ হয় । শূন্য হাসি
দিয়ে সারি পরিত্রাণ । তাহলে কি উৎসমুখ
এরকম ভাবি । শিল্পের মহিমা নিয়ে ভাবি

ডেঁয়োপিপড়ে


ওই চিরায়ত ভঙ্গিমায় একটা প্রগাঢ় আঁচড়
দিতে চেয়েছিলাম আমি
ওই প্রাচীন বল্কল ছিঁড়ে নগ্নহিম অবয়বে
ছুড়ে দিয়েছিলাম আজানু মসলিন
ওই আদিম উদ্ভাস থেকে তাকে
থিতু কোরতে চেয়েছিলাম একটা আনকোরা আদলে
শুদ্ধ প্রত্যয় ছিলো আমার কন্ঠস্বরে, অঙ্গিকার
আর তাই ডেঁয়োপিপড়ের মতো পিলপিল কোরে দ্যাখো
এখনো হেঁটে যাচ্ছে আমার
শ্রম, শান্তি, মেধা ও মনন.........

পাঠকের মতামতঃ